Ads 728×90
Ads 728×90
আপনি জানেন কি কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত আবিষ্কার পৃথিবীকে বদলে দিয়েছে? যে আবিষ্কারগুলো হঠাৎ করেই হয়ে গেছে। কিন্তু তার প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে।
আজকে আপনাদের এমন কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত আবিষ্কার সম্পর্কে বলবো যা বদলে দিয়েছে বিশ্বকে। অনাকাঙ্ক্ষিত আবিষ্কারের কথা বলতে গেলে সর্বপ্রথমে আসে পেনিসিলিনের কথা।
এছাড়াও এনেসথেসিয়া, মাইক্রোওয়েভ আরো কত আবিষ্কার হয়েছে যা ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত। অর্থাৎ কিনা হঠাৎ করে হয়ে গেছে এমন।
চলুন জেনে নেয়া যাক বিশ্বকে বদলে দেওয়ার মত ৮টি অনাকাঙ্খিত আবিষ্কার সম্পর্কে।
পেনিসিলিন এর আবিষ্কারকের নাম বোধকরি সবাই জানে। তবুও বলছি পেনিসিলিন এর আবিষ্কারক এর নাম হচ্ছে আলেকজান্ডার ফ্লেমিং। ১৯২৮ সালে আলেকজান্ডার ফ্লেমিং তার জীবনের সবচেয়ে বড় আবিষ্কারটি করেন।
কিন্তু এটা ছিল একটি অনাকাঙ্ক্ষিত আবিষ্কার। আলেকজান্ডার ফ্লেমিং ব্যাকটেরিয়া নিয়ে গবেষণা করছিলেন। পরীক্ষাটির মাঝামাঝি সময়ে তাকে তার ব্যক্তিগত কাজের জন্য তাকে হঠাৎ করে কিছুদিনের জন্য চলে যেতে হয়।
তিনি যখন ফিরে আসেন তখন দেখেন তার ব্যাকটেরিয়া মিডিয়ামে একটি নতুন ধরনের সংক্রমণ সৃষ্টি হয়েছে। এই সংক্রমণটি ছিল পেনিসিলিয়ামের সংক্রমণ।
যা থেকে তিনি পরবর্তীতে পেনিসিলিন আবিষ্কার করেন।
এনেসথেসিয়া আবিষ্কারের পূর্বে চিকিৎসার ব্যাপার গুলো অনেক কষ্টকর ছিল। তখনকার সময়ে রোগীকে সজ্ঞান অবস্থায় অস্ত্রোপচার সহ বিভিন্ন চিকিৎসা করা হতো।
তাই রোগীদের জন্য এটা ছিল আতঙ্কের মত। ১৮৪৪ সালে রোগীদের এই আতঙ্কের অবসান ঘটে। হোরেস ওয়েলস এই সময়ে এনেসথেসিয়া আবিষ্কার করেন।
এটিও একটি অনাকাঙ্ক্ষিত আবিষ্কার ছিল। ১৮০০ শতকের দিকে নাইট্রাস অক্সাইড ব্যবহার করা হতো বিভিন্ন ধরনের বড় বড় পার্টিতে। লোকেরা নাইট্রাস অক্সাইড এর প্রভাবে প্রচুর হাসাহাসি ও চিৎকার-চেঁচামেচি করত।
যা একটি পার্টির মুড আনার জন্য যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিল। ১৮৪৪ সালে এমনই একটি পার্টিতে হোরেস ওয়েলসের এক বন্ধুকে অপর একজন লাঠি দিয়ে আঘাত করে।
হোরেস ওয়েলস দেখলেন যে তার বন্ধুটি লাঠির আঘাতে মোটেও ব্যথা অনুভব করেনি। এর ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে আবিষ্কৃত হয় বহু আকাঙ্ক্ষিত এনেসথেসিয়া।
১৮৭৯ সালে আবার একটি অনাকাঙ্ক্ষিত আবিষ্কার ঘটে। আবিষ্কার টির নাম হল স্যাকারিন। Constantin Fahlberg এবং Ira Remsen এই দুইজন ছিলেন স্যাকারিন এর আবিষ্কার।
সেই সময় তারা coal tar derivatives এর উপর গবেষণা করছিলেন। গবেষণার মাঝপথে Constantin Fahlberg ডিনার খাওয়ার জন্য ল্যাবরেটরি ছেড়ে যান। ওই দিন তিনি এত ব্যস্ত ছিলেন যে খাওয়ার সময় হাত ধোয়ার কোথা পর্যন্ত ভুলে গিয়েছিলে।
খাওয়ার সময় তিনি অনুভব করলেন যে তিনি খুব মিষ্টি একটা কিছুর স্বাদ পাচ্ছেন। যা চিনির চেয়েও অনেক গুণ বেশি মিষ্টি। কিন্তু তার খাবারে কোন মিষ্টি আইটেম ছিলো না।
তিনি বুঝতে পারলেন তার হাতে কোন রাসায়নিক যৌগ লেগে রয়েছে যার স্বাদ মিষ্টি। পরবর্তীতে তিনি স্যাকারিন এর পেটেন্ট গ্রহণ করেন।
মাইক্রোওয়েভ আবিষ্কার করেন পার্সি স্পেনসর। তিনি একদিন একটি যন্ত্রের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ তিনি খেয়াল করলেন তার পকেটে থাকা চকলেট বারটি গলে গেছে।
একটি দুর্ঘটনার ফলেই সৃষ্টি হল মাইক্রোওয়েভ। যা পরবর্তীতে পার্সি স্পেনসরকে বড়লোক বানিয়ে দেয়।
ভায়াগ্রা আবিষ্কার হয় আরেকটি দুর্ঘটনার মাধ্যমে। ফাইজারের বিজ্ঞানীগণ তখন অ্যাংজাইটির ঔষধ আবিষ্কার করার চেষ্টা করছিলেন। তারা একটি বাড়ি বানালেন। এবং কিছু ভলান্টিয়ার খোঁজ করলেন।
তারা বেশকিছু ভলান্টিয়ারকে খুঁজেও পেলেন। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য সফল হলোনা। যে চিকিৎসার জন্য তারা এই বড়িটি বানিয়ে ছিলেন তা কাজ করছিল না।
যখন ভলান্টিয়ার পুরুষদের বড়ি খেতে নিষেধ করা হলো তারা বিজ্ঞানীদের কথা মানতে চাইলেন না। তারা বললেন যে তারা এখানে অন্যভাবে সুবিধা পাচ্ছে। সেই সুবিধা থেকেই মূলত আবিষ্কৃত হয় ভায়াগ্রা।
১৮৭০ সাল হল চুইংগাম আবিষ্কারের বছর। টমাস অ্যাডামস চুইংগাম আবিষ্কার করেন। এটিও একটি অনাকাঙ্ক্ষিত আবিষ্কার ছিল।
টমাস অ্যাডামস রাবারের বিকল্প বানানোর চেষ্টা করছিলেন। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার একটি গাছের ছোট চ্যাপ্টা অংশ নিয়ে গবেষণা করছিলেন। কিন্তু তার গবেষণা ব্যর্থ হয়।
তিনি রাগে টুকরাটিকে মুখে নিয়ে চূর্ণ করে ফেলতে চান। এর স্বাদ তার অনেক ভালো লাগে। এভাবে তিনি আবিষ্কার করেন চুইংগাম ।
ব্রান্ডির আবিষ্কারকের আবিষ্কারকের নাম জানা যায়নি। তবে তিনি যে একজন জাহাজের কর্মচারী ছিলেন সেটা নিশ্চিত করা গেছে। আবিষ্কারের সঠিক সালও জানা যায়নি।
তবে এটি ১৬০০ শতকের ঘটনা এটা নিশ্চিত করা গেছে। ওই ডাচ জাহাজের কর্মচারী কাজ ছিল জাহাজের সবাইকে ওয়াইন বিতরণ করা। ওয়াইনে জল মেশানো থেকে শুরু করে সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া ছিল তার দায়িত্ব।
একদিন তিনি একটু ওয়াইন খেতে চাইলেন। তিনি তার ওয়াইনটিকে তাপ দিয়ে আরো ঘন করলেন। ফলাফল স্বরূপ দেখা গেল যে এর স্বাদ ওয়াইন এর চেয়ে অনেক ভালো। আবিষ্কৃত হয়ে গেল ব্র্যান্ডি।
উইলিয়াম পারকিন নামের একজন গবেষক ম্যালেরিয়া রোগের ঔষধ আবিষ্কার করার চেষ্টা করছিলেন।
১৮৫৬ সালে তিনি কুইনিন এর উপর পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন। এই পরীক্ষা চালাতে গিয়ে নিজের অজান্তে উইলিয়াম সিন্থেটিক কালার মাউভ আবিষ্কার করেন।
পরবর্তীতে তিনি ম্যালেরিয়া সম্পর্কে গবেষণা বাদ দিয়ে সিন্থেটিক কালার বানানোর কারখানা তৈরি করেন। যা তাকে অনেক বড়লোক করে দেয়।